
পিকনিক বাস খাদে, ঢাবি শিক্ষার্থীসহ আহত ৩০
কক্সবাজারের রামু উপজেলায় পিকনিকের বাস খাদে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) রাজধানীর কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
রামু-মরিচ্যা সড়কের মেরংলোয়ার লম্বা ব্রিজের রেলিং ভেঙে শনিবার ভোর ৬টার দিকে পর্যটকবাহী বাস খাদে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার শাহজাহানের ছেলে আবির (২১), নাছির উদ্দীনের ছেলে আতিক (২২), আবু বশরের ছেলে মোছাদ্দেক (২২), নুরুল আমিনের ছেলে সোহান (২২), রফি উদ্দীনের ছেলে ইউনুস (২৪), মোস্তফা গাজীর ছেলে তরিকুল ইসলাম (২৬), হাবিবুর রহমানের ছেলে আব্দুর রউফ (২৫), মশরফ হুসাইনের ছেলে আবু মুছা (২৭), জাকির হুসাইনের ছেলে মন্জুরুল হুসাইন সাকিব (১৯), আব্দুল জাব্বার মৃধার ছেলে মেহেদী হুসাইন, কবিরের ছেলে নয়ন, মোতাহের সিকদারের ছেলে নাঈম হুসাইন (২২), আলতাফ হুসাইনের ছেলে ফয়সাল (২০), জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মোশরফ হুসাইন(২৫), বাচ্ছুর ছেলে সাইফুল ইসলাম বাপ্পি (৩০), শাহা জমালের ছেলে নিজাম (২৬), আশরাফ আলীর ছেলে হাসিব (১৯), আব্দুল মান্নানের ছেলে সজল (২৬), জাকির হুসাইন খানের ছেলে নজরুল হক সাকিব (১৯), নাহিদের মেয়ে রহিমা (২৬), শহিদুল ইসলামের ছেলে শফিক (২৪), বেলাল হোছাইনের ছেলে মোহাম্মদ (২৬), আব্দুর শুকুরের ছেলে গফুর (২৫), শ্রীনগর এলাকার মোছাদ্দেকের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৭), শরীয়তপুরের আসাদ আলীর ছেলে আবু বক্কর সিদ্দীক (২৫), বরিশালের শহিদুল ইসলামের ছেলে মোনাফ হুসেন সাঈদ (২৫), বরগুনা আমতলী এলাকার জালাল উদ্দিনের ছেলে জাহিদ ইসলাম, মোতাহের হোসাইনের ছেলে জিয়াউল করিম, ঢাকার আলতাফ হোসাইনের ছেলে নাজমুল হুসাইন (২৫), নজরুল ইসলামের ছেলে জুয়েল (২৭), বরগুনা, সদরের খলিলুল্লাহর ছেলে আল আমিন (২৬), কুমিল্লার সুলতানপুর এলাকার সুলতান আহমেদের ছেলে মাহিম (২৭), পটুয়াখালীর আবু তৈয়ব সিকদারের ছেলে রাজিব (২৭), যশোরের মশরফ হোসেনের ছেলে বকতিয়ার (২৫) এবং ঢাকার মির্জাপুর এলাকার আলতাফ হোসেনের ছেলে নোমান (২৭)।
আহতরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। তারা সেন্টমার্টিনে পিকনিকে যাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পরে স্থানীয় লোকজনসহ পুলিশ ও বিজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালসহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠায়।
পিকনিকে অংশ নেয়া ডাকসুর সদস্য মাহমুদুল হাসান জানান, ঢাকা থেকে দুটি বাসে ১১৭ শিক্ষার্থী শুক্রবার রাত ৯টার দিকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা দেন। এই ট্যুরটি ছিল ঢাকার মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে। এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৫ শিক্ষার্থী ছিলেন। তবে দুর্ঘটনার শিকার বাসে ঢাবির ৪-৫ শিক্ষার্থী ছিলেন। বাকিরা ঢাকার কয়েকটি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে একটি বাস রামু উপজেলা ব্রিজের রেলিং ভেঙে খাদে পড়ে যায়।
এতে আহত হয়েছে ৩০-৪০ জন। এদের মধ্যে ৫-৬ শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে এতে কারও মৃত্যু ঘটেনি।
ডাকসুর ওই সদস্য বলেন, আমাদের ১৯ তারিখে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনার কারণে ট্যুরটি বাতিল করা হয়েছে।
বাসে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহত নাজমুল হাসান জানান, ঢাকার পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্টুডেন্ট ওয়েব দুটি বাস নিয়ে ঢাকা থেকে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যাচ্ছিলেন তারা। সবাই মির্জাগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা এবং ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও পেশাজীবী।
একইভাবে মির্জাপুরের আহত নোমান জানান, বাসের যাত্রীরা ভোরে ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ বাসটি খাদে পড়ে যায়। এতে বাসের যাত্রীরা সবাই আহত হন। খবর পেয়ে বিজিবি, পুলিশ ও দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি থেকে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।
রামু হাইওয়ে পুলিশের একটি দল এসে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া বাসটি নিজেদের কব্জায় নেয়। উদ্ধারকারীরা বাসটি তুলতে সহযোগিতা করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় লোকজনও যোগ দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় আবুল হোসেন জানান, রামু-মরিচ্যা সড়কটি টেকনাফের সঙ্গে সংযোগের পুরনো সড়ক। বাসের চালক অনেক বছর আগে টেকনাফ যেতে এ সড়কটি ব্যবহার করেছিলেন। আজও লিংক রোড নতুন মহাসড়ক দিয়ে না গিয়ে ভুল করে পুরনো রামু আরকান সড়কের ভেতরে চলে আসে। নড়বড়ে ভাঙা ব্রিজের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে বাসটি খাদে পড়ে যায়।
রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ওয়ালিউর রহমান ও ডা. অনিক বড়ুয়া জানান, ভোর ৬টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত প্রায় ৩০ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর আহত ১৮ জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
Leave a Reply